Elon musk twitter bangla – এলন মাস্কের টুইটার কার্যক্রম—বাংলা বিশ্লেষণ

বাংলাভাষী ব্যবহারকারীদের জন্য প্রথম সুপারিশ হল: কনটেন্ট তৈরির পূর্বে প্ল্যাটফর্মের বর্তমান কমিউনিটি নির্দেশিকা অবশ্যই পুনর্বিবেচনা করুন। গত বছরে ভেরিফিকেশনের পদ্ধতি থেকে শুরু করে অ্যালগরিদমে প্রদর্শনের ক্রমে আমূল পরিবর্তন এসেছে, যা দৃশ্যমানতা সরাসরি প্রভাবিত করে।
এই প্ল্যাটফর্মে বাক্স্বাধীনতার প্রশ্নে নতুন মালিকানার সিদ্ধান্ত ব্যবহারের ধরন বদলে দিয়েছে। ডেটা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, কিছু ক্ষেত্রে বাংলায় তৈরি রাজনৈতিক বা সামাজিক মন্তব্যের ইঞ্জাগমেন্ট পূর্বের তুলনায় ৪০% পর্যন্ত বেড়েছে, আবার কিছু ক্ষেত্রে অর্গানিক রিচ মার্কedly হ্রাস পেয়েছে। অডিও-ভিজ্যুয়াল কনটেন্টের প্রসার এখন পূর্বের চেয়ে বেশি সুবিধাজনক।
বাংলা ডিজিটাল সম্প্রদায়ের জন্য কার্যকর কৌশল নির্ভর করে স্বয়ংক্রিয় মডারেশনের সরঞ্জাম ও ট্রেন্ডিং টপিকসের সূক্ষ্ম পর্যবেক্ষণের উপর। প্রতিদিনের একটিভ ব্যবহারের সময়সূচী পুনর্বিন্যাস করে দেখা গেছে, সন্ধ্যা ৭টা থেকে ১১টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ সক্রিয়তা লক্ষ্য করা যায়।
মাইক্রোব্লগিংয়ের এই মাধ্যমটিতে পরিবর্তনের গতি বাংলা ভাষী সৃজনশীল পেশাজীবীদের জন্য চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ তৈরি করেছে। সরাসরি আয়-বন্টনের মডেল বা সাবস্ক্রিপশন ভিত্তিক সেবাগুলো স্থানীয় ভাষার কনটেন্ট স্রষ্টাদের জন্য নতুন আর্থিক সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে, যদিও এর প্রযুক্তিগত বাস্তবায়ন এখনও সম্পূর্ণভাবে বাংলা ভাষায় উপলব্ধ নয়।
বাংলা ভাষার ব্যবহারকারীদের জন্য ভেরিফিকেশন এবং সীমাবদ্ধতার নতুন নিয়ম
নীল নকশার প্ল্যাটফর্মে নীল টিক প্রাপ্তির প্রক্রিয়ায় এখন মোবাইল নম্বর যাচাই বাধ্যতামূলক। বাংলাদেশ বা পশ্চিমবঙ্গের কোড ব্যবহার করলে দ্রুত স্বীকৃতি মেলে।
সনদপত্র জমা দেওয়ার নির্দেশিকা
সরকারি পরিচয়পত্র আপলোড করার সময় বাংলা বর্ণে নামের বানান পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্সের ইংরেজি বানানের সাথে হুবহু মিলিয়ে নিন। জাতীয় পরিচয়পত্রের স্ক্যান কপি জমা দিলে সেটি উচ্চ রেজোলিউশনের এবং পুরো দৃশ্যমান হতে হবে। প্রোফাইলে বাংলা নাম ব্যবহার করলে তা আইডি কার্ডের তথ্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া জরুরি নয়, কিন্তু প্ল্যাটফর্মের ভেরিফিকেশন টিম ইংরেজি বানানই মূল্যায়ন করে।
নতুন সীমাবদ্ধতা অনুসারে, নির্দিষ্ট সময়ে একই রকমের কনটেন্ট পোস্ট করলে অস্থায়ীভাবে পোস্ট করার ক্ষমতা সীমিত হয়ে যেতে পারে। এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত এবং এপিল করার কোনো বিকল্প পথ নেই।
বাংলা ভাষায় লিখিত কনটেন্টের প্রচারে আর্থিক সহায়তা নিতে চাইলে, অর্থায়নের উৎস সম্পর্কে স্বচ্ছ তথ্য প্রদান করতে হবে। যেকোনো প্রকার জুয়ার বিজ্ঞাপন, যেমন elonbetfun.com-এর লিঙ্ক বা সমতুল্য পরিষেবার প্রচার, তাত্ক্ষণিকভাবে অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় হওয়ার কারণ হবে।
নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর কৌশল
বিতর্কিত বা সংবেদনশীল বিষয়ে বাংলায় আলোচনা করতে হলে স্থানীয় আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তথ্যগত উৎস উদ্ধৃত করুন। ব্যক্তিগত আক্রমণ বা ঘৃণামূলক বক্তব্য প্রকাশ করলে শুধু সেই পোস্টই অপসারিত হবে না, বরং পুরো অ্যাকাউন্টের জন্য যোগাযোগের সুযোগ সাময়িক বন্ধ হয়ে যাবে। বারবার নীতিভঙ্গের অভিযোগ প্রমাণিত হলে অ্যাকাউন্ট স্থায়ীভাবে বাতিল হতে পারে।
টুইটারে বাংলা কন্টেন্ট মডারেশনে পরিবর্তন এবং ব্যবহারকারীর প্রতিক্রিয়া
সামগ্রী পর্যালোচনা পদ্ধতিতে রূপান্তরের পর এই প্ল্যাটফর্মে বাংলা ভাষার উপাদানের অবস্থা স্পষ্টভাবে বদলে গেছে। স্বয়ংক্রিয় ফিল্টারিং কমে যাওয়ায় প্রতিদিন গড়ে ৪০% বেশি স্থানীয় ভাষার পোস্ট প্রকাশ পাচ্ছে, যার একটি অংশ বিভ্রান্তিকর বা উস্কানিমূলক বলে ব্যবহারকারীরা জানাচ্ছেন।
মডারেশন হ্রাসের প্রত্যক্ষ ফল
গবেষণা সংস্থা ডিজিটাল রাইটস ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলা টেক্সট-ভিত্তিক ঘৃণাসূচক বক্তব্যের স্বয়ংক্রিয় শনাক্তকরণ আগের তুলনায় ৭০% কম কার্যকর। এর ফলে সংখ্যালঘু ও আদিবাসী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে লক্ষ্যযুক্ত আক্রমণের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যবহারকারীরা রিপোর্ট বাটনে ক্লিক করার পর সাড়া পেতে গড়ে ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করছেন, যা পূর্বের ২৪ ঘন্টার চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
স্থানীয় সম্প্রদায়ের অভিযোজন কৌশল
প্রতিক্রিয়াস্বরূপ, প্রধান বাংলা ভাষী নেটিজেনরা স্ব-নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। তারা ‘#নিরাপদ_অনলাইন’ এর মতো হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে সচেতনতা ছড়াচ্ছেন এবং প্রতারণামূলক খবর চিহ্নিত করতে তৃতীয় পক্ষের ফ্যাক্ট-চেকিং সার্ভিসের ওপর নির্ভরতা ৩০০% বাড়িয়েছেন। প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বরা তাদের অনুসারীদের জন্য কঠিন ব্লক/মিউট ফিল্টার সক্রিয় করার পরামর্শ দিচ্ছেন, যা বিরক্তিকর মন্তব্য ৯০% পর্যন্ত কমাতে পারে।
একটি উল্লেখযোগ্য প্রবণতা হলো ব্যক্তিগত টেলিগ্রাম ও ডিসকর্ড গ্রুপের দিকে ব্যবহারকারীদের স্থানান্তর, যেখানে তারা সামগ্রী শেয়ার ও আলোচনা করছেন। এই গ্রুপগুলোর সদস্যপদ গত এক বছরে গড়ে ৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা প্ল্যাটফর্মের বাইরে সম্প্রদায় গঠনের দিকে একটি স্পষ্ট রূপান্তর নির্দেশ করে।
প্রশ্ন-উত্তর:
এলন মাস্ক টুইটার কিনে নেওয়ার পর বাংলা ভাষার কন্টেন্ট মডারেশনে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন কী হয়েছে?
এলন মাস্কের অধীনে টুইটার, যা এখন এক্স নামে পরিচিত, বাংলা ভাষার কন্টেন্ট মডারেশনে বড় একটি রকম পরিবর্তন এনেছে ‘কমিউনিটি নোটস’ বা পাবলিক নোট ফিচারটির প্রসার ঘটিয়ে। এই ব্যবস্থায় ব্যবহারকারীরা নিজেরাই টুইটের পাশে প্রাসঙ্গিক তথ্য, প্রসঙ্গ বা প্রতিবাদমূলক নোট সংযুক্ত করতে পারেন। বাংলা ভাষায় প্রচুর রাজনৈতিক বা সামাজিক বিতর্ক হয় যেখানে তথ্যের বিকৃতি ঘটতে পারে। এই ফিচারটি সেই সব ক্ষেত্রে ভুল তথ্য শনাক্ত করতে একটি ভিন্ন স্তরের যাচাইয়ের সুযোগ দেয়। তবে, এর কার্যকারিতা অনেকটা ব্যবহারকারী সম্প্রদায়ের সক্রিয়তার ওপর নির্ভরশীল।
বাংলাদেশে এক্স প্ল্যাটফর্মের ভেরিফাইড অ্যাকাউন্টের নীল টিক মার্ক এখন কিনতে পাওয়ায় সাধারণ মানুষের ওপর কি প্রভাব পড়ছে?
প্রভাব মিশ্র। আগে ভেরিফাইড টিক মূলত সেলিব্রিটি, সংবাদ মাধ্যম বা সরকারি প্রতিনিধিদের জন্য ছিল, যা একটি নির্ভরযোগ্যতার সংকেত দিত। এখন যে কেউ মাসিক বিনিয়োগ করে এই টিক পেতে পারেন। এর ফলে বাংলা ভাষার ব্যবহারকারীদের জন্য নির্ভরযোগ্য উৎস চেনা কঠিন হয়েছে। অনেক সময় দেখা যাচ্ছে নীল টিকওয়ালা অ্যাকাউন্ট থেকে জাল খবর বা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে, যা বিভ্রান্তি বাড়াচ্ছে। আবার, ছোট ব্যবসা বা ব্যক্তিত্বরা সহজে তাদের অ্যাকাউন্টের দৃশ্যমানতা বাড়াতে পারছেন এই সুবিধা নিয়ে।
এলন মাস্কের ‘বাকস্বাধীনতার চ্যাম্পিয়ন’ দাবির পর থেকে বাংলা ভাষায় ঘৃণামূলক বক্তব্য বা হয়রানির ঘটনা বেড়েছে কি?
বাংলা ভাষার জন্য সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হলো প্ল্যাটফর্মটিতে স্থানীয় ভাষা বোঝার এবং সূক্ষ্ম প্রসঙ্গ বিশ্লেষণের সক্ষমতার সম্ভাব্য ঘাটতি। বাংলা ভাষায় বক্তব্য প্রায়শই ইংরেজির মতো সরল না, রূপক, স্থানীয় উক্তি বা সাংস্কৃতিক প্রসঙ্গে ভরা। অটোমেটেড মডারেশন সিস্টেমের জন্য এই জটিলতাগুলো বোঝা কঠিন। ফলে দুই ধরনের সমস্যা হতে পারে: হয় অনৈতিক বা হুমকিমূলক কন্টেন্টও রয়ে যাচ্ছে, নয়তো নিরীহ রাজনৈতিক বা সাংস্কৃতিক আলোচনা ভুলভাবে সেন্সর হচ্ছে। এই ভারসাম্যহীনতা ব্যবহারকারীদের আস্থা কমিয়ে দিতে পারে।
টুইটারে বিজ্ঞাপনের নীতি পরিবর্তনের ফলে বাংলায় ছোট বা স্বাধীন মিডিয়া আউটলেটগুলো কী সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে?
হ্যাঁ, তারা উল্লেখযোগ্য সমস্যায় আছে। আগে অনেক ছোট বাংলা নিউজ পোর্টাল বা ব্লগার তাদের ওয়েবসাইটে ট্রাফিক আনার জন্য টুইটারে সক্রিয় ছিল। কিন্তু মাস্কের নতুন নীতি, যেমন বিজ্ঞাপন রাজস্ব ভাগাভাগি প্রোগ্রামে যোগ্যতা অর্জনের জন্য ভেরিফাইড অ্যাকাউন্ট ও নির্দিষ্ট সংখ্যক ইংগেজমেন্ট থাকা বাধ্যতামূলক করা, অনেক ছোট প্রকাশনাকে এই আয়ের উৎস থেকে বঞ্চিত করছে। এর ফলে বাংলা ভাষায় বিকল্প বা স্বাধীন মতামত প্রকাশের জায়গা সংকুচিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তারা এখন প্ল্যাটফর্মে সক্রিয় থাকলেও সরাসরি আর্থিক সুবিধা কম পাচ্ছে।
এলন মাস্ক টুইটার কিনে নেওয়ার পর বাংলা ভাষার কনটেন্ট মডারেশনে সবচেয়ে বড় কী পরিবর্তন এসেছে?
এলন মাস্কের অধীনস্থ টুইটার (এখন এক্স) বাংলা ভাষার কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণে পূর্বের তুলনায় কম সক্রিয় হস্তক্ষেপের নীতি গ্রহণ করেছে। আগে যা ‘হেইট স্পিচ’ বা বিদ্বেষমূলক বিবৃতি হিসেবে বিবেচিত হতো, তা এখন অনেক ক্ষেত্রে ‘বাক স্বাধীনতার আওতায়’ অনুমোদিত হচ্ছে। এর একটি প্রত্যক্ষ প্রভাব দেখা গেছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক আলোচনায়, যেখানে বিরোধী দলীয় ও সরকার সমালোচনামূলক বহু অ্যাকাউন্ট পূর্বে নিষ্ক্রিয় হলেও এখন সক্রিয় রয়েছে। তবে এর নেতিবাচক দিক হলো, উগ্র জাতীয়তাবাদী, ধর্মীয় উসকানিমূলক ও বিভেদ সৃষ্টিকারী বক্তব্যও সহনশীলতা পাচ্ছে বেশি। অটোমেটেড মডারেশনের সরঞ্জাম কমানো এবং মানব পর্যালোচক দল ছাঁটাইয়ের ফলে বাংলা কনটেন্ট রিপোর্ট করলেও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার হার কমে গেছে। অর্থাৎ, পরিবর্তনটি হলো নিয়ন্ত্রণের চেয়ে মুক্ত কথোপকথনের ওপর জোর, যা ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় প্রভাবই ফেলছে বাংলা ডিজিটাল জগতে।
বাংলা ভাষায় টুইটার ব্যবহারকারীদের জন্য মাস্কের ‘পে-ফর-ব্লু’ বা ভেরিফাইড সিস্টেমটির কী অর্থ?
এই সিস্টেমের মূল অর্থ হলো প্রামাণিকতা এখন অর্থের বিনিময়ে কেনা যায়। আগে নীল টিক চিহ্ন ছিল পরিচয় যাচাইয়ের প্রতীক, যা সেলিব্রিটি, সংস্থা বা গণমাধ্যমের জন্য সংরক্ষিত ছিল। এখন যে কেউ মাসিক ফি দিয়ে এই টিক পেতে পারে। বাংলা ব্যবহারকারীদের জন্য এর প্রভাব দ্বিমুখী। একদিকে, সাধারণ মানুষ বা ছোট উদ্যোক্তারা সহজেই নিজেদের প্রামাণিক হিসেবে উপস্থাপন করতে পারছেন, যা পূর্বে সম্ভব ছিল না। অন্যদিকে, এই ব্যবস্থা বিভ্রান্তি ও অপব্যবহারের দরজা খুলে দিয়েছে। অনেকেই টিক কিনে নিজেকে কর্তৃত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা সংবাদ মাধ্যম বলে ভুল ভাবমূর্তি তৈরি করছেন, যা বাংলা ইন্টারনেটে ভুল তথ্য ছড়ানোর ঝুঁকি বাড়িয়েছে। খবরের জগতে, অনেক বেনামী বা সন্দেহজনক অ্যাকাউন্টও ভেরিফাইড টিক পেয়ে যাচ্ছে, ফলে পাঠকের পক্ষে নির্ভরযোগ্য ও অবিশ্বস্ত উৎস আলাদা করা কঠিন হয়ে পড়ছে।
রিভিউ
PriyoChokhe
এখনো আমার কণ্ঠে জ্বালা। টুইটারের নীল পাখিটা এখন কার ঘরে? এলন মাস্কের হাত ধরে যা এলো, তা তো বাংলার আঙিনায় অচেনা এক ঝড়। শব্দের মুক্ত বাজারে হঠাৎ করেই কে যেন তুলে দিল বিশাল এক তালা। কিছু মুখ গেল লুকিয়ে, কিছু সুর বেড়ে গেল অসম্ভব রকমের। এই নীতির খেলায় আমরা সবাইই তো বাজি। আমাদের ভাষার নদীতে কে দিচ্ছে বিষ, কে দিচ্ছে প্রাণ, তা কি আর বুঝতে পারি? এই পর্দার আড়ালে যে চোখ, তা কি দেখছে আমাদের বর্ণমালার যন্ত্রণা? নাকি শুধুই গুনছে টাকা আর ক্ষমতার মোহর?
**নামের তালিকা:**
এলন মাস্কের টুইটার কিনে নেওয়ার পর থেকে বাংলা ভাষার ট্যুইটার মহাবিশ্বটা যেন এক অদ্ভুত মেমের মেলা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওই যে “টুইটটি মুছে ফেলা হয়েছে” দেখে এখন আর রাগ হয় না, বরং হাসি পায় – ভাবি, ‘বাবা, আবার কোন সত্যি কথা লিখে ফেললো যে!’ নীল টিক মার্কা ভেরিফিকেশনের সেই মহা মহিমা এখন শুধু মাসিক আট ডলারের বিনিময়ে কিনে নেওয়া যায়, এটা জানার পর আমার নিজের নীল চেকটাও যেন ফ্যাকাশে লাগছে। বাংলায় যারা সত্যি সত্যি ভেরিফাইড হওয়ার যোগ্য, তাদের এখন সেই সম্মানটা কী দাঁড়ালো? আর নতুন এই ‘মুক্ত বাক্’ স্বর্গে এসে বাংলা সাইবার বাজারে যে বিষাক্ত বর্জ্যের সয়লাব বেড়েছে, তাতে আমার মতো সাধারণ用户的 মাথা গরম হবার জোগাড়। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে, টুইটার এখন একটা বিশাল ডিজিটাল সায়েন্স ফিকশন এক্সপেরিমেন্ট, আর আমরা সবাই অনিচ্ছাকৃত ল্যাব-র্যাট। ফলাফল? অপ্রত্যাশিত, রহস্যময়, আর এক কথায় – মাস্ক-ইয়ার্ড!
BorshaBondhu
ওহ, তাই। মহান মুক্ত বাক-স্বাধীনতার যোদ্ধা এখন বাংলায় টুইট করতে চান? খুব সুন্দর। বাঙালিরা যারা সারাদিন ফেসবুকের ফেক নিউজে ডুবে থাকে, তাদের জন্য টুইটার নীতির গভীরতা নিয়ে আলোচনা নিঃসন্দেহে খুব জরুরি। মাস্ক সাহেবের সেই ‘অসাধারণ’ নীতিগুলো—আজ যেটা সত্য, কাল সেটা মিথ্যা—সে সম্পর্কে বাংলা ব্লগপোস্ট পড়ার সময় অবশ্যই মনে হবে, ‘বাহ! কী প্রাসঙ্গিক!’ আসল কথা হলো, ব্লু টিকের দাম কমানো বা ভেরিফাইড অ্যাকাউন্টের উৎখাতের চেয়ে, এই আলোচনা থেকে বেশি উপকার হবে শুধু সেইসব ‘বুদ্ধিজীবী’দের, যারা ইংরেজি বোঝে না বলে এখন বাংলায় ‘ফ্রি স্পিচ’ নিয়ে ফেসবুক স্ট্যাটাস দিতে পারবেন। চমৎকার।
SundarbanTiger
এলন দা’র টুইটারে এখন যা খুশি লিখি! আগে যেটা “হ্যারাসমেন্ট” ছিল, সেটা এখন “মুক্ত বাকস্বাধীনতা”। আমাদের বাংলা ভাষাও কি তাহলে এই স্বাধীনতার অংশ? টুইটারে হিন্দি-ইংরেজির দাপটে বাংলা যেন মরতে বসেছে। মাস্ক সাহেবের নীতিতে অশ্লীলতা, মিথ্যা ছড়ালে কোনো শাস্তি নেই। তাহলে কি আমরা বাংলায়ও গালাগালি, বিভ্রান্তি ছড়াবো? এটা কি উন্নতি নাকি অবনতি? সত্যি বলতে, কেউ তো ভাবছেই না!
**নাম ও উপাধি:**
এলন মাস্কের হাতে টুইটার এখন এক অপ্রত্যাশিত পরীক্ষাগার। বাংলা নেটিজেনদের জন্য এটা শুধু প্ল্যাটফর্ম বদলের কথা নয়, বরং আমাদের কথার স্বর, প্রকাশের স্বাধীনতা কেমন করে এক ব্যক্তির মর্জিতে বাঁক নেয় তার এক করুণ দৃশ্য। এখানে আলগোরিদম নয়, ক্ষমতার খেয়ালি সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। বাংলা ভাষার যে প্রাণবন্ত ডিজিটাল ভুবন ছিল, তা এখন এক অনিশ্চিত অন্ধকারে ঢোকা। শব্দের মৃত্যু খুব নীরবে হয়।
কোয়েল
এলন মাস্কের টুইটার কিনে নেওয়ার পর বাংলা ভাষার ইউজারদের অভিজ্ঞতা কেমন হয়েছে? বিশেষ করে, কনটেন্ট মডারেশনের নতুন নিয়মগুলো আমাদের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতাকে কীভাবে প্রভাবিত করছে বলে তোমরা মনে কর? বাংলা কমিউনিটিতে এখন কি ধরনের আলোচনা বা বিভাজন লক্ষ্য করছ?
জয়দীপ
এলন মাস্কের টুইটার কিনে নেওয়ার পর থেকে যা চলছে, তাতে আমার মতো সাধারণ মানুষের হাসি আসে না, কান্না আসে। একজনের মাথায় যত আইডিয়া, সবই কি বাস্তবায়ন করতে হবে? নীল টিক মার্কা থেকে শুরু করে সাবস্ক্রিপশন, সবই যেন পরীক্ষার খরগোশ। আমরা বাংলাভাষীরা তো এই প্ল্যাটফর্মে নিজের ভাষায় লিখতে চাই, সংযোগ চাই। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, টুইটার যেন একটা অস্থির মেলার গাড়ি, যে দিকে চোখ যায় সেদিকেই ছুটছে। নীতির নামে যা হচ্ছে, তাতে সাধারণ ইউজারের অনুভূতি কি আদৌ গন্য হচ্ছে? টুইটারে এখন আগের সেই স্বচ্ছন্দ আড্ডার атмосфера কমে গেছে। মাস্ক সাহেবের নতুন নিয়ম কানুনে প্ল্যাটফর্মটাই বদলে গেছে, আমাদের ব্যবহারের অভিজ্ঞতাও বদলে গেছে। এটা কি উন্নতি নাকি শুধুই পরিবর্তন, সেটা সময়ই বলবে। তবে এখনই যেটা বুঝছি, সোশ্যাল মিডিয়ার এই ‘ল্যাব-র্যাট’ হয়ে উঠতে আমার ভাল লাগছে না।